আজকে আমি আলোচনা করবো – অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কিভাবে করবেন? এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া কতটুক গুরুত্বপূর্ণ!
সত্যি বলতে সোসাইল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব অপরিসীম অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য। একজন অ্যাফিলিয়েটর, প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ট্রাফিক খুঁজবে আর সেই ট্রাফিকের উৎস হলো সোশ্যাল মিডিয়া।
আর আমরা জানি ট্রাফিক ছাড়া প্রোডাক্ট সেল হবেনা। আর প্রোডাক্ট সেল না হলে সেটাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও বলা যাবেনা।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মেইন উদ্দ্যশ্য হলো প্রোডাক্ট সেল দেওয়া। আর এই প্রোডাক্ট সেল দেওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হলো সোসাল মিডিয়া।
বর্তমান ডিজিটাল দুনিয়ায় মানুষ সোসাল মিডিয়ার সাথে এমন ভাবে মিশে যাচ্ছে যে সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া আপনি অন্য কোন ভালো বিজনেসও চিন্তা করতে পারবেন না। আপনি যদি ভালো ভাবে অনলাইনেও বিজনেস করতে চান তাহলেও সোশ্যাল মিডিয়া আপনার বিজনেস সাকসেসের জন্য অনেক ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।
অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা বিজনেস করার প্রধান লক্ষ্যই হলো – আপনার দক্ষতা কাজে লাগিয়ে যে কোন পজিটিব প্রোডাক্ট মানুষের সামনে উপস্থাপন করা। মানুষের ভালো লাগলে আপনার দেখানো প্রোডাক্ট কিনতেও পারে আবার নাও কিনতে পারে।
আপনি যদি খুব ভালো ভাবে একটা প্রোডাক্ট এর ফিচার গুলো মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারেন তাহলে ঐ প্রোডাক্ট এর সেল বেশি হবে এতাই স্বাভাবিক। আর এভাবেই আপনি একজন দক্ষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে নিজেকে প্রমান করতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? বিস্তারিত এখানে…
সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়না?
অবশ্যই করা যায়। আপনি খুব ভালো মানের একটি ওয়েব সাইট দিয়েও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে নিজেকে প্রমান করতে পারবেন। বাট সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার কাজ গুলো আর একটু সহজ হয়ে যাচ্ছে।
কিভাবে সহজ হয়ে যাচ্ছে ?
আপনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়াতে কতটুক সময় দিন একটু চিন্তা করুন। ধরে নিচ্ছি আপনি প্রতিদিন ২ ঘন্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটান। এই দুই ঘন্টায় আপনার চোখের সামনে কত কিছুই চলে আসছে।
এমন যদি হয় যে – আমি ধরে নিচ্ছি আপনি একজন ফুটবল পাগল মানুষ। অর্থাৎ আপনি ফুটবল খুব লাইক করেন আর আপনার প্রিয় ক্লাব হলো বার্সেলোনা। আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় কাটাচ্ছেন, হঠাৎ আপনার চোখের সামনে একটি জার্সির এড। আর সেই জার্সিটা হলো বার্সোলোনা অথবা রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি।
আমি নিচ্চিত আপনার তখন ইচ্ছে হবে ইস! যদি জার্সিটা কিনতে পারতাম। এই অবস্থায় যদি আপনার কাছ এনাফ টাকা থাকে আপনি কিন্তু দেরি না করে জার্সিটা কিনে নিবেন। এতে আপনার মার্কেটে যাওয়ার পরিশ্রম টা কম হলো আর আপয়ানার প্রিয় ক্লাবের জার্সিটাও কিনা হয়ে গেলো।
এখানে আপনার যেমন সুবিধা হলো, ঠিক তেমনি যেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এই জার্সিটার প্রোমোট করেছিলো তার কিন্তু কিছু টাকা ইনকাম হলো।
আবার এমনো অনেক আছে। যাদের কাছে এনাফ টাকা না থাকায় হয়তো জার্সিটা সাথে সাথেই কিনবেনা বাট দুই একদিন পরে কিনবে।
এমন কেউ কেউ থাকবে যারা জার্সিটা হয়তো সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখে ঠিক করে নিবে । আগামি কাল ফ্রেন্ড দের সাথে মার্কেটে তো যাবো, তখন এই জার্সিটা কিনে নিবো।
দেখুন একটা জার্সির প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়াতে কত উপায়ে সেল করা যায় সাথে প্রোডাক্ট এর পরিচিতিও বাড়ানো যায়। এভাবেই বিজনেস এর প্রচার এবং প্রসার হয়ে থাকে।
আপনার মত আরো কত মানুষ এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নানান রকমের প্রোডাক্ট ঘরে বসে কিনছে এর গ্রাফিং হিসাব অনেক বেশি। আর এই জন্যই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার সংখ্যা তো অনেক। কোন সোশ্যাল মিডিয়ার সাইট গুলো এফিলিয়েট এর জন্য খুব ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে?
ইউটিউব ঃ
হ্যা, ইউটিউব ভিডিও কনটেন্ট ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া। আর আমি ইউটিউব কে একআপনি আবার একটু চিন্তা করুন-আপনি যদি আপনার সেই পছন্দের বার্সেলোনা বা রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিটির ভিডিও রিভিউ দেখতেন তাহলে কেমন হতো ?
আশা করি বুঝেছেন। ইউটিউব কেমন মাধ্যম অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য এর একটি ভিডিও রোচোর্স আমি এখানে দিয়ে দিলাম।
ফেসবুক ঃ
আপনি হয়তো বলছেন ফেসবুকের কথা আগে কেন বলিনি। আসলেই ফেসবুক ট্রাফিক এর দিক দিয়ে ১ নাম্বার এই নিউজ সবাই এখন জেনে গেছি।
ফেসবুকে প্রতি মাসে ২ ভিলিওন এর মত ট্রাফিক কাউন্ট করা হয়। জাস্ট অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তাই ফেসবুক হবে একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের জন্য প্রোডাক্ট সেলের অন্যতম ভালো মাধ্যম।
টুইটার ঃ
মার্কেটিং এর জন্য টুইটার কে পছন্দের তালিয়ার রাখতেই হবে। সেলিব্রেটিদের আস্তানা বলতে পারেন টুইটার। আপনার প্রোডাক্ট তো সেলিব্রেটিরাও কিনতে পারে। একটু মজা করেই হয়তো টুইটার নিয়ে বলে ফেললাম।
কথা কিন্তু মিথ্যা না, সেলিব্রেটিরা টুইটার টা বেশি ইউজ করে থাকেন। আর সাধারণ মানুষও আস্তে আস্তে টুইটার ইউজ করতেছে। তাই আমি মনে করি টুইটারও হতে পারে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য খুব ভালো মাধ্যম।
গুগল প্লাস ঃ
গুগল প্লাস টা ইউটিউব এর সাথে কানেকটেড থাকার কারনে গুগল প্লাসে প্রোডাক্ট সেল করা অনেক ইজি। আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভালো একটা অবস্তানে চলে আসলে আপনার গুগল প্লাস ও ভালো অবস্থানে চলে আসবে এটাই এক ধরনের কানেকটিবিটি।
ফিউচার নেট ডট ক্লাব ঃ
আরে এটা কি বললেন? ফিউচার নেট আবার কি? অবাক হবেন না। ফিউচার নেট অনেকটা ফেসবুকের মতন দেখতে। আর মোটামুটি ফিচার গুলো দেখতে ফেসবুকের মতই।
বাট পার্থক্য হলো ফিউচার নেটে যেসব মেম্বার নিয়মিত কানেকটেড এদের ৯০% হলো বিজনেস করার জন্য ফিউচার নেট ইউজ করে। আর এই জন্যই একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর জন্য প্রোডাক্ট প্রোমোট করা ফিউচার নেটে খুব ইজি।
ফিউচার নেটে আপনি অনেক ভালো মানের লেনডিং পেইজ কিনে ইউজ করতে পারবেন। আরো অনেক অনেক সুবিধা আছে ফিউচার নেটে। আমার একটা আর্টিকেল আছে ফিউচার নেট ডট ক্লাব নিয়ে । এখান থেকে দেখে আসবে পারেন।
স্টিমিট ঃ
স্টিমিট কি? স্টিমিট হলো একটি খুব জনপ্রিয় সোশ্যাল ব্লগ সাইট। যেখানে একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার আর্টেকেলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল করতে পারবে। স্টিমিট নিয়ে আমার একটি আর্টিকেল এখান থেকে পড়ে আসতে পারেন। তবে স্টিমিটে ক্রিপ্টোকারেন্সি রিলেটেড প্রোডাক্ট বেশি সেল হবে,কারন এই সাইট টি ক্রিপ্টোকারেন্সি রিলেটেড ট্রাফিক বেশি।
অনেক বেশি বুঝানোর চেষ্টা করেছি কি ? আমি আসলেই জানিনা আপনি কতটুক বুঝতে পেরেছেন। আমি ৬ টা সোশ্যাল সাইটের কথা যদিও বলেছি। আপনি বা কোন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার যদি প্রথম দুইটি সোসাইল মাধ্যম নিয়ে ভালোভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে ১০০% সাকসেস হবে।
সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে মানুষের কানেকটিবিটি দিন দিন বেড়েই চলছে। আর তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া গুলো খুব ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে ।
আজ এই পর্যন্তই। আর্টিকেল টি ভালো লাগলে বা কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ !!
Nice Article
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ
ধন্যবাদ!